অপু চৌধুরী
ভোর বেলায় তার ঘুম ভেঙে গেলো। জীবনের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে এসেছে আকাশ। কিন্তু এখনো জীবনের কোনো গতি করতে পারেনি। বেকার জীবন খুব অসহ্য লাগে। তারপরও কিছু করার নেই। চাকরি তো আজকাল সোনার হরিণ। পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখলেই আবেদন করছে। তারপর ছবি তোলা, বায়োডাটা লিখা, ব্যাংক ড্রাফট কেনা, ইন্টারভিই - এইই চলছে। কিন্তু চাকরির নাগাল আর মিলছে না।
মিথ্যে মরীচীকার পেছনে ছুটতে আকাশের এখন আর ভালো লাগে না। তবুও ছুটছে। রাস্তায় হেঁটে বেড়ানোর সময় হঠাৎ কলেজ জীবনের কোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে যায়। সোনালি দিনগুলোর স্মৃতিচারণের পর বন্ধুটির কণ্ঠ থেকেও সেই হতাশা ঝরে পড়ে। মিথ্যে সান্ত্বনা দেয় আকাশ, হাল ছেড়ো না বন্ধু। যদিও নিজে জানে হাল ধরেও কোনো লাভ নেই।
২.
আজ একটা চিঠি এসেছে। চিঠি হাতে নিয়ে খামের উপর প্রেরকের নাম পড়ে আকাশ - নীলুর চিঠি।
প্রিয় আকাশ,
ভালোবাসা নিও, কেমন আছো?
এই চিঠির আগে পাঠানো দুটো চিঠির কোনো উত্তর আজও পাইনি। চিঠির উত্তর না দিয়ে কীভাবে থাকো। আমার মনে হয় তুমি আমার চিঠিই খুলেই দেখো না। এক মাস সতেরো দিন হলো, তুমি আমাদের বাসায়ও আসো না। আমি তোমার চেহারা ভুলে যাচ্ছি। তুমি কি এরপরও একবার আসবে না। তোমাকে চিঠি লিখতে আমার চোখে জল এসে গেলো। তোমার কাছে এর মূল্যইবা কতোটুকু?
তোমাকে কেনো এতো ভালোবাসি আমি নিজেও তা জানি না। তুমি আমাকে এত কষ্ট দাও কেনো?
ভালো থেকো?
শুভ কামনায়
নীলু
আকাশের চোখ কি ভিজে উঠলো? এতো ভালোবাসার তীব্র সুখের উৎস কোথায় - সে জানে না। নীলুর এই চিঠির জবাবও কি সে দিতে পারবে? সবার মতো আকাশও যে কঠিন সময়ের বাসিন্দা। এ কঠিন সময়ের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে যেনো ক্ষয়ে যাচ্ছে আমাদের অস্তিত্ব। তাই তো ইচ্ছের আকাশ ছোঁয়া হয় না।
>> পথিক ১৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন