শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভিনদেশী সাহিত্য >> শোধ : গি দ্য মোপাসঁ (তারিফ হক)

শোধ

মূল : গি দ্য মোপাসঁ ।। ভাষা বদল : তারিফ হক

বনিফ্যাসিওর গড়ের উপর এক ছোট্ট দরিদ্র কুটিরে পলো স্যাভেরিনির বিধবা স্ত্রী ও তার একমাত্র ছেলে থাকে। বনিফ্যাসিও শহরটি একটি পাহাড়ের উপর তৈরি। বেশ কিছু স্থানে এটি সমুদ্রের উপর ঝুলে আছে শৈবালে পরিপূর্ণ এক প্রণালীর মুখোমুখি সারদিনিয়ার নিচু তীরের দিকে। এর অপর দিকের পারের পুরো অংশই আরেকটি প্রণালী দিয়ে ঘেরা যা এর পোতাশ্রয় হিসেবে কাজ করে, পারের কাছে এটা এক বিশাল করিডোরের মতো। খাড়া দেয়ালের মধ্য দিয়ে ঘুরপথে প্রণালীটি দিয়ে ইতালিয়ান বা সারদিনিয়ান ছোট জেলে নৌকা এবং প্রত্যেক চাঁদে পুরানো বাষ্প-চালিত নৌযান অ্যাজিকো থেকে তীরের প্রথম বাড়ি পর্যন্ত যাওয়া-আসা করে। শুভ্র পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে শুভ্রতর বাড়িগুলো। উঁচু পাথরের উপর তাদের অনেকটা বন্য পাখির নীড়ের মতো মনে হয়। মনে হয় তারা মুখোমুখি সেই বিপজ্জনক প্রণালীটিকে শাসন করছে যা দিয়ে প্রায় কোনো দিনই কোনো জাহাজ চলাচলের সাহস করে না। অশান্ত বাতাস সমুদ্রকে আলোড়িত করে এবং হালকা ঘাসেঢাকা সৈকত ক্ষয় করে চলে। বাতাস দ্রুত বেগে এর দুই তীরের পারকে আঘাত করে। ঢেউয়ের ফেনায়িত চাবুক কালো পাথরগুলোকে ঘিরে ফেলে যেগুলো সর্বত্র ঢেউদের কেটে ফেলে। এটা দেখে জলে ভাসতে থাকা ছেঁড়া ক্যানভাসের মতো মনে হয়।
বিধবা স্যাভেরিনির বাড়ি এই পারের সীমা আঁকড়ে ধরে আছে। এর তিনটি জানালা এই নির্জন বন্যতার মুখোমুখি। তিনি এখানে একাকী তার ছেলে এন্তোনি ও দীর্ঘ-রোমশ শিপ জাতের মাদি কুকুর সেমিল্যান্তিকে নিয়ে বাস করেন। এন্তোনি সেমিল্যান্তিকে শিকারের সময় কাজে  লাগায়।
এক সন্ধ্যায় ঝগড়া-ঝাঁটির পর এন্তোনি স্যাভেরিনিকে ছোরার আঘাতে হত্যা করে নিকোলাস র্যাভোলাতি। র্যাভোলাতি সেই রাতেই সারদিনিয়ায় পালিয়ে যায়। যখন তার বৃদ্ধা মায়ের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা তার লাশ নিয়ে এলো, তখন তিনি কাঁদলেন না, অনেকক্ষণ ধরে নিষ্পলক তাকিয়ে থাকলেন, তারপর তিনি লাশটির উপর তার বৃদ্ধ হাত প্রসারিত করলেন, তিনি খুনের প্রতিশোধ নেবার প্রতিজ্ঞা করলেন। তার পাশে আর কেউ থাকলো না এবং তিনি লাশ ও গর্জন করতে থাকা কুকুরটিকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করলেন। কুকুরটি বিছানার নিচে দাঁড়িয়ে তার মনিবের দিকে মাথা বাড়িয়ে লেজ শক্ত করে অনবরত গর্জন করতে লাগলো। সে নড়লো না এবং বৃদ্ধাও নড়লেন না। তিনি উপুড় হয়ে তার ছেলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন আর নীরবে অশ্রু ঝরাচ্ছিলেন।
যুবক শুয়ে আছে, তার উলেন কোটের সামন দিকটা ছিঁড়ে গেছে। দেখে মনে হয় সে যেনো ঘুমোচ্ছে। কিন্তু সবখানে রক্ত লেগে আছে, দ্রুত ড্রেসিংয়ের জন্য-ছেঁড়া শার্টে, ওয়েস্ট কোটে, প্যান্টে, তার মুখ এবং হাতে। রক্ত শুকিয়ে তার দাড়ি ও চুলে জমাট বেঁধে আছে।
বৃদ্ধা মা তার সাথে কথা বলতে লাগলেন। তার কথার সময় কুকুরটি নীরব হয়ে আছে : ‘আমি তোর বদলা নেবোই, আমার ছোট্ট সোনা, আমার খোকা, আমার অসহায় শিশু। ঘুমো, ঘুমো আমি তোর বদলা নেবোই। তুই কি শুনছিস! তোর মা প্রতিজ্ঞা করছে! তোর মা সব সময় কথা রাখে। তুই জানিস সে রাখে।’
ধীরে তিনি তার উপর ঝুঁকে পড়লেন, তার ঠোঁট দিয়ে মৃত ঠোঁট ছুঁয়ে দিলেন।
তারপর সেমিল্যান্তি আবারো গর্জাতে লাগলো। সে দীর্ঘ দীর্ঘ চিৎকার করতে লাগলো, একঘেয়ে, কান ফাটানো ভয়ানক চিৎকার।
তারা সেখানেই থাকলো। তাদের দুজনেই, মা আর কুকুরটি সকাল অবধি।
এন্তোনি স্যাভিরিনিকে পরদিন কবর দেওয়া হলো এবং শীঘ্রই বোনিফ্যাসিওতে তাকে নিয়ে কোনো কথা উঠলো না, তার কোনো ভাই, নিকট আত্মীয় ছিলো না। শোধ নেবার জন্য কোনো লোক ছিলো না। একা তার বৃদ্ধা মা এর জন্য শোচনা করতে লাগলেন।

তিনি ভোর থেকে রাত অবধি প্রণালীর অপর তীরের শুভ্র রেখার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। এটি একটি ছোট্ট সারদিনিয়ান গ্রাম - লঙ্গোসারদো। কর্শিয়ান ডাকাতেরা চাপের মুখে এখানে আশ্রয় নেয়। গ্রামটির জন বসতির প্রায় পুরোটাজুড়েই রয়েছে তারা। তাদের নিজ দেশের মুখোমুখি থেকে তারা কর্শিকায় ফেরার সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে। তিনি জানতেন নিকোলাস র্যাভোলাতি এই গ্রামেই আশ্রয় নিয়েছে। সারা দিন জানালা দিয়ে সেই দিকে তাকিয়ে একাকী তিনি প্রতিশোধ নেবার কথা ভাবতেন। তিনি কীভাবে এটা করবেন - অন্যের সাহায্য ছাড়া - তিনি এত দুর্বল - মৃত্যুর এতো কাছাকাছি?  কিন্তু তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন- তিনি লাশের কসম খেয়েছিলেন। তিনি আর অপেক্ষা করতে পারছিলেন না। তার কী করা উচিত? তিনি আর রাতে ঘুমোতে পারছিলেন না, তার আর ঘুম ছিলো না- ছিলো না কোন সুখ; চরম একাগ্রতায় তিনি একটি উপায় খুঁজছিলেন।
কুকুরটি তার পায়ের কাছে ঘুমোতো। কখনো মাথা তুলে সে শূন্যে গর্জন করতো। যখন থেকে তার মনিব গত হয়েছে সে প্রায়ই এভাবে গর্জন করে যেনো বা সে তাকে ডাকছে, যেনো বা তার প্রাণী আত্মা তার স্মৃতিতে অশান্ত।
এক রাতে সেমিল্যান্তি আবার গর্জাতে লাগলো -  মায়ের মনে একটা ভাবনা এলো ভয়াবহ প্রতিশোধের জন্য একটা স্বাভাবিক ভাবনা। তিনি সকাল অবধি এ নিয়ে চিন্তা করলেন। তারপর দিনের শুরুতে তিনি চার্চে গেলেন। তিনি পাথরে হাঁটু গেঁড়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন যেনো তিনি তার বৃদ্ধ অসহায় শরীরে সন্তান হত্যার শোধ নেবার মতো শক্তি দেন। তারপর তিনি বাড়ি ফিরে এলেন।
বাড়ির সামনেই ছিলো বৃষ্টির পানি ধরার ব্যারেল। তিনি এটি উল্টে ফেললেন এবং খুঁটি দিয়ে মাটির সাথে আটকে দিলেন। তিনি সেমিল্যান্তিকে এর ভেতর শেকলবদ্ধ করে বাড়ির ভেতর চলে গেলেন। এরপর তিনি তার ঘরের ভেতর অনবরত পায়চারি করতে লাগলেন। তখনও তার দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিলো সারদিনিয়ার উপকূলের দিকে। সেখানেই আছে সেই খুনী। 
সারাদিন এবং সারারাত কুকুরটি গর্জন করলো। সকালে বৃদ্ধা তাকে এক বাটি জল দিলেন। শুধু জল, কোনো স্যুপ নয় -  কোনো রুটি নয়। 
আরেকটি দিন কেটে গেলো। ক্লান্ত সেমিল্যান্তি ঘুমিয়ে গেছে। তার পরদিন তার চোখ চকচক করতে লাগলো, তার লোম খাড়া হয়ে উঠলো, সে একভাবে তার শেকল টানতে লাগলো। তারপরও বৃদ্ধা তাকে কিছু খেতে দিলেন না। ক্ষুধায় পাগল পশুটি কর্কশ চিৎকার করতে লাগলো। আরও একটি রাত কেটে গেলো।
যখন বেলা ফুটলো মাতা স্যাভেরিনি তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে দুই আঁটি খড় আনলেন। তিনি তার স্বামীর পোশাক নিয়ে একটি কুশপুত্তলিকা বানালেন। সেমিল্যান্তির খোঁয়াড়ের অপরদিকে একটি খুঁটি পুঁতে তিনি কুশপুত্তলিকাটিকে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তারপর তিনি পুরোনো লিলেনের একটি মস্তক তৈরি করলেন। কুকুরটি ক্ষুধায় উন্মাদ হওয়া সত্ত্বেও কুশপুত্তলিকাটির দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকলো।
তারপর বৃদ্ধা শুকরের কসাইয়ের কাছ থেকে একটি দীর্ঘ ব্ল্যাক পুডিং ১ কিনলেন। বাড়িতে ফিরে তিনি খোঁয়াড়ের কাছে আগুন জ্বাললেন এবং সসেজটি ঝলসাতে লাগলেন।
সেমিল্যান্তি উন্মাদ হয়ে উঠলো, তার মুখ থেকে লালা ঝরতে লাগলো, তার দৃষ্টি নিবদ্ধিত হলো খাবারের দিকে যার ঘ্রাণ সরাসরি তার পাকস্থলীতে আঘাত করছে। 
বৃদ্ধা সেই গরম সসেজটি দিয়ে কুশপুত্তলিকাটির একটি কলার বানালেন। তিনি অনেক্ষণ ধরে এটি তার গলার চারিদিকে বাঁধলেন যেনো এটি তার গলার ভেতর শক্ত হয়ে বসে। যখন এটি বাঁধা হলো তিনি কুকুরটিকে মুক্ত করে দিলেন। একটা দীর্ঘ লাফ দিয়ে কুকুরটি কুশপুত্তলিকাটির কাঁধে চড়লো এবং এর টুঁটি ছিঁড়ে ফেলতে লাগলো। সে এক টুকরো মাংস নিয়ে মাটিতে এলো এবং আবার আক্রমণ করলো। এর কণ্ঠ ছিঁড়ে খাবারের কিছু অংশ নিয়ে সে আবার পতিত হলো, আবারও চরম হিংস্রতায় লাফিয়ে উঠলো।
বৃদ্ধা নীরব নিথরভাবে এটি দেখছিলেন তার চোখে ছিলো মৃদু প্রসন্নতা। তারপর তিনি কুকুরটিকে আবার শেকলবদ্ধ করলেন। দু’দিন তাকে অভুক্ত রেখে পুনরায় সেই বিস্ময়কর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করলেন। তিন মাস ধরে তিনি কুকুরটিকে এভাবে শিকারে অভ্যস্ত করালেন। তারপর তিনি আর তাকে শেকলবদ্ধ করাতেন না বরং ইশারার মাধ্যমে তিনি একে পুত্তলিকাটিকে আক্রমণের নির্দেশ দিতেন। 
তিনি কুকুরটিকে পুত্তলিকার গলায় খাবার না বেঁধেও একে আক্রমণের প্রশিক্ষণ দিলেন। এবং এই প্রশিক্ষণের পর তাকে তার জন্য রাঁধা বিশেষ খাবার দ্বারা পুরস্কৃত করতেন। তারপর থেকে যখনই সেমিল্যান্তি সেই খড়ের মানুষটিকে দেখতো তখনই কাঁপতে শুরু করতো এবং তার মালকিনের দিকে তাকাতো এবং তিনি তখন তার আঙুল উঁচিয়ে বলতেন ‘যা!’
মাতা স্যভেরিনি বুঝলেন যে, সময় এসে গেছে, এক রবিবারে তিনি কনফেশন ২ ও উৎসাহপূর্ণ কমিউনিয়ন ৩ সম্পন্ন করলেন। তারপর তিনি ভিক্ষুকের বেশ ধরে সেমিল্যান্তিকে সাথে নিয়ে দরদাম করে এক সারদিনিয়ান জেলের নৌকায় উঠলেন। সে তাকে ঐ পারে পৌঁছে দিলো। মাতার কাছে একটি ক্যানভাসের ব্যাগে ছিলো এক টুকরো ব্ল্যাক পুডিং। সেমিল্যান্তি দুদিন ধরে কিছু খায়নি, প্রতি মিনিটে বৃদ্ধা তাকে সেই সুস্বাদু খাবারের ঘ্রাণ শুঁকিয়ে তার ক্ষুধাকে আরও বাড়িয়ে তুলছিলেন।
তারা লঙ্গোসারদোতে উপস্থিত হলেন। কর্শিকান বৃদ্ধা ধীর পায়ে হাঁটছিলেন। তিনি রুটির দোকানে গেলেন এবং নিকোলাস র্যাভোলাতির বাড়ির খোঁজ করলেন। 
র্যাভোলাতি তার পূর্বের কাঠ মিস্ত্রির কাজ আবার শুরু করেছে। সে একা তার দোকানের পেছনে কাজ করছিলো।
বৃদ্ধা দরোজা খুলে বললেন : ‘হেই! নিকোলাস!’
সে ঘুরে দাঁড়ালো, তখন তিনি তার কুকুরকে ছেড়ে দিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলেন : ‘যা... যা... ওকে কামড়া, ওকে কামড়া!’
উন্মত্ত পশুটি দ্রুত এগোলো এবং তার টুঁটি ছিঁড়ে ফেললো। লোকটি দু’হাত দিয়ে কুকুরটিকে ধরে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে লাগলো। কয়েক মিনিট সে পা দিয়ে মাটিতে আঘাত করে কাতরালো। তারপর সে নিস্তব্ধ হয়ে গেলো তখন সেমিল্যান্তি তার কণ্ঠ শুঁকে তা ছিঁড়ে টুকরো-টুকরো করে ফেললো।

নিজেদের বাড়ির দরোজায় বসে থাকা দুজন প্রতিবেশী এতটুকুই শুধু স্মরণ করতে পারলো যে এক দরিদ্র বৃদ্ধ একটি কালো শুকনো কুকুর নিয়ে বেরিয়ে আসলো। কুকুরটি হাঁটতে হাঁটতে তার দেওয়া হলুদ মতো কিছু একটা খাচ্ছিলো।

নির্ঘণ্ট
১.  শুকরের মাংসের তৈরি এক ধরনের খাদ্য।
২.  চার্চে যাজকের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে পাপ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা। 
৩.  খ্রিস্টের শেষ নৈশভোজের অনুসরণকারী প্রার্থনা রীতি।
.......................................................................................................
[গি দ্য মোপাসঁ (৫ আগস্ট ১৮৫০-৬ জুলাই ১৮৯৩), পুরো নাম হেনরি রেইনে আলবার্ট গি দ্য মোপাসঁ (Henri René Albert Guy de Maupassant) উনিশ শতকের জনপ্রিয় ফরাসি কথাশিল্পী যাকে আধুনিক ছোটো গল্পের অন্যতম প্রবর্তক ও পথিকৃৎ বলে বিবেচনা করা হয়।
মোপাসেঁর কাহিনীগুলো তার রচনাশৈলীর পরিমিতিবোধ ও পরিসমাপ্তির স্বাভাবিকতার জন্য উল্লেখযোগ্য। তার অনেক গল্পের প্রেক্ষাপট জুড়ে রয়েছে ১৮৭০-এর দশকের ফ্রেঞ্চ-প্রুশিয়ান যুদ্ধে আক্রান্ত সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টের চিত্র। ১৮৬৯ সালে মোপাসঁ প্যারিসে আইন বিষয়ে লেখাপড়া শুরু করেন, কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে ফরাসি-প্রুশীয় যুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়। এরপর ১৮৭২ থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত তিনি সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে ফ্রান্সের নৌ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। 
১৮৮০ সালে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে মোপাসেঁর সাহিত্য জগতে পদার্পণ। মাত্র এক দশক সাহিত্যচর্চার সুযোগ পান মোপাসঁ, এই সংক্ষিপ্ত সময়ে তিনি তিন শ’ ছোটো গল্প, ছয়টি উপন্যাস, বেশ কিছু কবিতা এবং তিনটি ভ্রমণকাহিনী লেখেন। দুর্ভাগ্যবশত তারুণ্যের শুরুতেই তিনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন, যা তাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। শেষে মারাত্মক মানসিক বৈকল্যের শিকার হয়ে ১৮৯২ সালের ২ জানুয়ারি কণ্ঠনালী কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্যারিসের একটি প্রাইভেট অ্যাসাইলামে ভর্তি করা হয়, এবং সেখানেই পরের বছর অর্থাৎ ১৮৯৩ সালের ৬ই জুলাই, মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই প্রতিভাবান সাহিত্যিক। - অনুবাদক]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন